মুহাম্মদ আবু সিদ্দিক ওসমানী :

সেনাবাহিনীর (অব.) মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার অন্যতম আসামি টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের যাবতীয় রাষ্ট্রীয় পুরস্কার ও পদক বাতিলের দাবি জানানো হয়েছে। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী পিপি এডভোকেট ফরিদুল আলম আদালতে যুক্তিতর্ক শুরু হওয়ার প্রথম দিনে আদালতের কাছে এ দাবি জানান। পিপি অ্যাডভোকেট ফরিদুল আলম বলেন, ওসি প্রদীপের বিরুদ্ধে ২০৪ জনের বেশি নিরীহ মানুষকে বিচারবহির্ভূত হত্যার অভিযোগ রয়েছে।

রবিবার ৯ জানুয়ারি কক্সবাজারের জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে আসামিদের উপস্থিতিতে আলোচিত এ মামলার দুই পক্ষের যুক্তিতর্ক শুরু হয়। একটানা ৪ দিন আদালতে এ যুক্তিতর্ক চলবে।

আদালতে বাদি পক্ষে যুক্তিতর্কে ঢাকা থেকে আগত সিনিয়র আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমানও অংশ নেন। তিনি সাক্ষীদের জবানবন্দি ও আইনের বিভিন্ন রেফারেন্স উল্লেখ করে আদালতের কাছে আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি কামনা করেন। তিনি বলেন, ‘সব ধরনের সন্দেহের ঊর্ধ্বে উঠে প্রসিকিউশন চাঞ্চল্যকর এই হত্যা মামলার আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করেছেন, তাই আমাদের প্রত্যাশা হচ্ছে- আইন ও পদ্ধতির আলোকে সর্বোচ্চ শাস্তি তথা ন্যায় বিচার কামনা করছি।’
দীর্ঘ বক্তব্যে তিনি আরো বলেন, ‘আসামিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজসে মেজর সিনহাকে হত্যা করেছে। পুলিশের কিছু বিপথগামী সদস্য দেশের একজন মেজরকে সুপরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে- এতে সার্বিকভাবে সমগ্র পুলিশের কোনো দোষ নেই।সৈয়দ রেজাউর রহমানের দাবি, মামলা দায়ের থেকে শুরু করে তদন্ত, আসামিদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ, অভিযোগপত্র দায়েরসহ সবকিছুই আইন ও পদ্ধতি মোতাবেক যথাযথভাবে সম্পন্ন হয়েছে।

তিনি ছাড়াও রাষ্ট্রপক্ষে আরো যুক্তিতর্কে অংশ নেন, কক্সবাজার জেলা বারের সিনিয়র আইনজীবী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর ও মোহাম্মদ মোস্তফা।এসময় অতিরিক্ত পিপি এডভোকেট মোজাফফর আহমদ হেলালী, এপিপি ও জেলা আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট জিয়া উদ্দিন আহমদ উপস্থিত ছিলেন।

একইদিন আসামী এপিবিএনের এসআই মো. শাহজাহান, কনস্টেবল মো. রাজীব ও মো. আবদুল্লাহ’র পক্ষে এডভোকেট শামশুল আলম, এডভোকেট ওসমান সরওয়ার শাহীন, আসামী টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের নুরুল আমিন, মো. নিজামুদ্দিন ও আয়াজ উদ্দিনের পক্ষে এডভোকেট মোহাম্মদ জাকারিয়া যুক্তিতর্কে অংশ নেন।

কক্সবাজার জেলা কারাগার থেকে প্রিজনভ্যানে করে কড়া নিরাপত্তায় মামলার ১৫ আসামিকেও আদালতে আনা হয়।

এ মামলায় ৮৩ জনকে সাক্ষী করা হলেও তারমধ্য থেকে এ পর্যন্ত ৬৫ জনের সাক্ষ্য নিয়েছে আদালত। জেরা শেষ হওয়ার পর ২০২১ সালের ৬ ডিসেম্বর ফৌজদারি কার্যবিধি ৩৪২ ধারায় ১৪ জন আসামি আদালতে তাদের লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন।